লগি বৈঠার তা-বের শিকার হয়ে শহীদ হয়েছেন জসিম উদ্দিন। শহীদ জসিম উদ্দিন ৪ ভাই ২ বোনের মধ্যে তৃতীয় ছিলেন। বড় ভাই ১৯৯৯ সাল থেকে আমেরিকা অবস্থান করছেন। অপর দুই ভাইও আয়ারল্যান্ডে অবস্থানরত। শহীদ জসিম উদ্দিন ১৯৯৬ সালে সিঙ্গাপুর যান। সেখানে তিনি ২ বছর অবস্থান করেন। ২০০১ সালে তিনি দক্ষিণ আফ্রিকা, ২০০২ সালে সৌদি আরব ও ২০০৫ সালে পুনরায় দক্ষিণ আফ্রিকায় যান। পিতার মৃত্যুর সংবাদ শুনে ২০০৬ সালের মার্চে তিনি দেশে আসেন। ১২ নবেম্বর পুনরায় দক্ষিণ আফ্রিকা চলে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু ২৮ অক্টোবর সবকিছু তছনছ হয়ে যায়। লগিবৈঠা বাহিনীর বুলেটের আঘাতে লাশ হতে হলো শহীদ জসিম উদ্দিনকে।
২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবর সাড়ে ১১টার দিকে তিনি ঘুম থেকে উঠেন। ১২টার দিকে স্ত্রী নারগিস ও শিশুকন্যা নাওফিসহ একত্রে বসে নাস্তা করেন। তারপর শিশুকন্যা নাওফির সাথে মোবাইল নিয়ে লুকোচুরিও খেলেছেন। এ সময় ঢাকা মেডিকেল কলেজ থেকে ফোন আসে। পরিচিত এক রোগীকে দেখতে বের হন তিনি। বিকেল ৪টায় স্ত্রী নারগিসের সাথে মোবাইলে কথাবার্তা হয়। এর কিছুক্ষণ পর প্রচার মাধ্যমে জসিম নামে একজনের মৃত্যুর সংবাদ শুনে শিউরে ওঠেন নারগিস। পরে তিনি নিশ্চিত হন এ জসিম অন্য মানুষ। তারপরও মন মানে না। নারগিস মিস কল দিলেন তার প্রাণের মানুষটিকে। সাথে সাথেই জসিম উদ্দিন কলব্যাক করলেন। জানালেন, “রাস্তায় কোন যানবাহন নেই তাই হেঁটে হেঁটেই আসছি। চারদিকে ভীষণ গোলযোগ। চিন্তা করো না। আমি ৫টার মধ্যে বাসায় পৌঁছতে পারবো।” কে জানে এটাই জসিমের শেষ কথা স্ত্রী নারগিসের সাথে। বিকেল ৫টা পর্যন্ত নারগিস অপেক্ষা করেন তার প্রিয় মানুষটির জন্য।
শহীদ জসিম উদ্দিন ১৯৭২ সালে চাঁদপুর জেলার হাজীগঞ্জ উপজেলার সুদিয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৯৩ সালে তিনি ¯œাতক সম্পন্ন করেন। ২০০৪ সালে ২৩ জুলাই চাঁদপুর জেলার শাহরাস্তি উপজেলার মনিপুর গ্রামের নারগিস আক্তারের সাথে তিনি বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। ২০০৫ সালের ১৫ মে তিনি কন্যা সস্তানের জনক হন।